কলকাতা 

একই মঞ্চে বিজেপি প্রার্থী তাপস রায় ও তৃণমূল মুখপাত্র কুনাল ঘোষ! তারপর কি ঘটলো? জানতে হলে পড়ুন

শেয়ার করুন

বিশেষ প্রতিনিধি : তৃণমূল আর বিজেপি যে একই মুদ্রার এপিঠ ওপিঠ তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। কিন্তু লোকসভা নির্বাচন চলাকালীন সময়ে যেভাবে শাসক তৃণমূল দলের মুখপাত্র এবং সাধারণ সম্পাদক কুনাল ঘোষ ও উত্তর কলকাতার বিজেপি প্রার্থী তাপস রায় একই মঞ্চে হাজির হলেন এবং বক্তব্য রাখলেন মে দিবসের সকালে তা নজির বহীন।

এটা একটি সৌজন্যের ছবি হতে পারত কিন্তু হলো না। কুনাল ঘোষ যে ভাষায় বললেন এবং তাপস রায়কে সমর্থন করলেন। তাতে এটাই স্পষ্ট হয়েছে। এতদিন ধরে রাজ্য রাজনীতিতে যে বাইনারি তা চলছিল তৃণমূল আর বিজেপি একই। তা প্রকৃতপক্ষে কুনাল বাবুই প্রমাণ করে দিলেন। যদিও রক্তদান শিবিরের অনুষ্ঠানে যেকোনো রাজনৈতিক দলের নেতা উপস্থিত হতেই পারেন। এটাকে সামাজিক অনুষ্ঠান বলা যেতে পারে। সামাজিক অনুষ্ঠান যখন রাজনৈতিক অনুষ্ঠানে পর্যবষিত হয় তখনই প্রশ্ন ওঠে কুনাল বাবুর চাইছেন কী? কলকাতার ৩৮ নম্বর ওয়ার্ডে এক রক্তদান শিবিরের আয়োজন করে এলাকার যুবকেরা মে দিবসের সকালে। সেই রক্তদান শিবিরে উপস্থিত হন উত্তর কলকাতার বিজেপি প্রার্থী প্রাক্তন তৃণমূল নেতা তাপস রায় এবং বিজেপির জেলা সভাপতি তমোঘ্ন ঘোষ ।

Advertisement

মে দিবসের দিনে এই অনুষ্ঠানে বিজেপি এবং তৃণমূলের সমর্থকরা উপস্থিত ছিল। সেই সভাতে হাজির হন তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক কুনাল ঘোষ। এই পর্যন্ত সব ঠিকঠাক ছিল। কুনাল ঘোষ পৌছানোর আগেই বিজেপি প্রার্থী তাপস রায় বক্তব্য শেষ করে দিয়েছেন। কুনালের নিজের পাড়ায় তিনি বক্তব্য রাখতে উঠলেন। শুরু করলেন এভাবে,‘‘জনপ্রতিনিধি তাপস রায়ের সম্পর্কে আমার কিছু বলার নেই। উনি যত দিন জনপ্রতিনিধি ছিলেন, তত দিন মানুষকে পরিষেবা দিয়েছেন। দিন-রাত তাঁর দরজা মানুষের জন্য খোলা থাকত। মানুষ যখন তাঁকে ডেকেছেন তখন পেয়েছেন।’’ এর পরে কুণাল এ-ও বলেন, ‘‘আমরা তাপস রায়কে এক পরিবারে রাখতে চেয়েছিলাম। কিন্তু দুর্ভাগ্য, পারিনি। আজকে উনি প্রার্থী। কিন্তু অন্য দলের। আমাদের দলের প্রার্থী সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়। আমরা আমাদের দলের প্রার্থীর জন্য কাজ করব। তাপসদার দলের কর্মীরা তাঁর জন্য কাজ করবেন।’’

এ পর্যন্ত সবই ঠিক ছিল। এরপরেই কুনাল যা বললেন তাই ভোটের বাজারে শৃঙ্খলা বিরোধী নয়তো। অবশ্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে কুনালের কথা এখন অমৃত সমান। তৃণমূল নেতা বলেন, ‘‘এখানে কোনও ছাপ্পা ভোট হবে না। যাঁর ভোট তাঁকে দিতে দিন। মানুষ ঠিক করে নিন, কে প্রকৃত প্রার্থী। যদি কোথাও কোনও ছাপ্পা হয়, জেনে রেখে দেবেন তৃণমূল নেতৃত্বই বারণ করবে, কোনও অবস্থায়, কোনও বুথে মানুষের ইচ্ছার বিরুদ্ধে একটা ভোটও যেন না পড়ে।’’

মানুষ ঠিক করে নেবেন কে প্রকৃত প্রার্থী এই কথাটা বলার মধ্য দিয়ে তৃণমূল নেতা ও শাসকদলের মুখপাত্র কুনাল ঘোষ আসলে কি বুঝাতে চাইছেন তা ওই এলাকার তৃণমূল কর্মীদের মধ্যে কোন সংশয় রইল না। কিন্তু প্রশ্ন উঠেছে তৃণমূলের নেতাই যদি তার দলের প্রার্থীর বিরুদ্ধে সরাসরি এভাবে কথা বলেন তাহলে তা কি শৃঙ্খলা ভঙ্গের পর্যায়ে পড়ে না?


শেয়ার করুন

সম্পর্কিত নিবন্ধ